পাটগ্রামের দহগ্রাম মহিলা মাদ্রাসাটির নাজুক অবস্থা প্রকাশ করায় বাবার সামনেই ছাত্রীকে চর থাপ্পর।
লালমনির কন্ঠ ডেস্ক।। পাটগ্রামের দহগ্রাম মহিলা মাদ্রাসাটির ভিতরের নাজুক অবস্থা প্রকাশ করায় বাবার সামনেই ছাত্রীকে চর থাপ্পর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার তিনবিঘা করিডোর পেরিয়ে দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা ভূখন্ডটি ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত। সেখানকার মানুষ অত্যন্ত ধর্মভীরু। সহজ সরল লোকজন ধর্মীয় শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেন বলে সেখানে একটি আবাসিক মহিলা মাদ্রাসা চালু করেছেন কর্তৃপক্ষ। তবে মাদ্রাসাটিতে কোন কমিটি না থাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
বহুল আলোচিত দহগ্রাম ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম বাজারের কাছে গড়ে উঠা ওই মহিলা মাদ্রাসায় আবাসিক ব্যবস্থাপনায় ৩১ জন নারী শিশুসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ওই মাদ্রাসায় পড়েন বলে জানা গেছে।
মাদ্রাসাটিতে সুপারিন্টেনডেন্ট পদে আছেন মাওলানা আরিফুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রীসহ তিনজন সহকারী শিক্ষকেই নারী। এরপরেও নানা রকম ভয় ও আশঙ্কা কাজ করে অভিভাবকদের মধ্যে। অভিভাবকরা সবসময় থাকেন চিন্তায়।
সম্প্রতি পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের সফিয়ার রহমান নামে এক অভিভাবক ওই মাদ্রাসার আবাসিকে থাকা তার মেয়ের খবর নিতে গিয়ে জানতে পারেন ভিতরের অনেক বিষয় আপত্তিকর।
মহিলাদের মহিলা শিক্ষক দেখভাল করার কথা থাকলেও সুপার নিজে আবাসিক তদারকি করেন।এসময় কমিটিথর লোকজন থাকার কথা অথচ জানেন না কেউ।সুপারের বাড়ীর পাশে নিজ অর্থায়নে গড়ে তোলা এ মাদ্রাসাটির ভিতরে বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভর্তি ফি ৭শ টাকা,সারা বছরের জন্য বিদ্যুত বিল মাত্র ২শ টাকাসহ প্রতি মাসে আবাসিকে থাকা ১ হাজার খাওয়া বাবদ ১৪শ টাকা হিসেবে নেওয়া হয়।
এরপরও সেখানে একবেলার বাসি পঁচা তরিতরকারি আরেকবেলা মিশেল করে খাওয়ানো হয়।৩১ জন শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার অভাব।
মাদ্রাসার টিউবওয়েলের পানিতে এত পরিমাণ আয়রণ যে ওই পানি পান করা, ভাত তরকারি রান্না করাসহ গোসল অনুপযোগী। তারপরও শিক্ষার্থীরা চাপে পড়ে সেই পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হওয়ার কারণে অনেকের শরীরে নানা রোগ বালাই বাসা বেঁধেছে।
মাদ্রাসাটির ভিতরের এমন সব সত্য ঘটনা বাবাকে জানালে বাবার সামনেই সেই ছাত্রীর গালে চড় থাপ্পর মারেন মাদ্রাসা সুপারের স্ত্রী জনৈক সহকারী শিক্ষিকা। এমন ঘটনার পর মাদ্রাসায় থাকা নিজের মেয়েকে উদ্ধার করে নাম কেটে বিদায় নেন বাবা সফিয়ার রহমান। এমন খবর জানার পর বিষয়টা অনেকের নজরে এসেছে। শুধু পাটগ্রাম উপজেলার ইউনিয়নের নয়, বিভিন্ন এলাকার মেয়ে শিশু ও নারীদের দহগ্রাম গুচ্ছগ্রাম মহিলা মাদ্রাসাটিতে পড়ানো হয়।
মানসম্মত খাবার, নিয়মিত চিকিৎসার অভাবে অনেক মেয়ে পড়ার চাপে মানসিক ও শারিরীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় গড়ে তোলা ধর্মীয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দিকে প্রশাসনিক নজর থাকা উচিত। এছাড়াও মাদ্রাসাটিতে একটি পরিচালনা কমিটি খুবই প্রয়োজন বলে এলাকাবাসীর মন্তব্য।
এ ব্যাপারে দহগ্রাম মদিনাতুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার মাওলানা আরিফুল ইসলামের সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ধর্মীয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দিকে প্রশাসনিক নজর থাকা উচিত বলে স্থানীয়রা দাবী করেন।